
সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় : ওরা যেন বাস্তবের হান্স(hans)। হ্যাঁ, সেই হল্যান্ডের(holland) হান্স ব্রিঙ্কারের কথাই বলছি। সুন্দরবনের (sundarban)বেশিরভাগ অঞ্চলেই দেখা মিলেছে বাস্তবের হান্সের। ওরা কেউ পিঠ দিয়ে , কেউ হাত দিয়ে কোটালের জেরে গ্রামে(village) ঢুকে পড়া জল আটকাতে চেষ্টা করেছে। ওদের ছবি এখন ভাইরাল সোশ্যাল মাধ্যমে।
ওদের শরীরের উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে জল। ধাক্কা মারছে পিঠে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ওরা ঠায় দাঁড়িয়ে ওদের শেষ সম্বলটুকু বাঁচাতে। ওদের গ্রামকে বাঁচাতে ওঁরা সবাই মিলে শরীর পেতে দিয়েছে। যেন লড়াইয়ে শত্রুকে বলছে ‘গেলে তোকে আমার উপর দিয়েই যেতে হবে’। অনেকেই শেষ চেষ্টা করেও পারেননি। কিন্তু এই বিপুল চেষ্টার পরিমাপ হার জিত দিয়ে হয় না। লড়াইটা জীবনের। ঘটনা হল এদের কারও নাম জানা যায়নি। ওরা সবাই আলাদা আলাদা ভাবে বাস্তবের হান্স ব্রিঙ্কার।
ইয়াস (yaas) যত না ক্ষতি করেছে অনেক বেশি সমস্যা বাড়িয়েছে কোটালের জল। বহু জায়গায় নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। এর বেশিরভাগ সুন্দরবন অঞ্চলের। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে রাজ্য সরকার৷
মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ গাছ লাগিয়ে বাঁধকে শক্তিশালী করায় জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘ ঘুর্ণিঝড় ইয়াসে ১৩৪টি বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। ১৫ লক্ষের বেশি মানুষকে রেসকিউ সেন্টারে রাখা হয়েছে। ৩ লক্ষেরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত।’
বুধবার আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি জানান, ভরা কোটালের জন্যই আজ সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। তিনি জানান, ‘দক্ষিণ ২৪ পরগনায়র বহু জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত। পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেক জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কলকাতার কালীঘাট, চেতলা, রাসবিহারীতে জল উঠেছে। নোনাজল ঢুকে যাওয়ায় কৃষির ক্ষতি হয়েছে। মৎস্যচাষেরও ক্ষতি হয়েছে।’ একইসঙ্গে একজনের মৃত্যুর খবরও জানিয়েছেন মমতা। তবে সেটা ‘অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ’ বা দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে আগামী শুক্রবার দুই ২৪ পরগণা ও পূর্ব মেদিনীপুরে যাবেন তিনি।’
একটু হান্সের গল্পটাও মনে করিয়ে দেওয়া যাক। আট বছরের ছোট ছেলে হান্স। তার বাড়ি হল্যান্ডের হার্লেমে। নদী/বাঁধের ধারে ছোট্ট শহর। সন্ধ্যাবেলা বন্ধুর বাড়ি থেকে বাড়ি ফিরছিল সে। আসছিল বাঁধের পাশ দিয়ে । হঠাৎ শুনতে পায় জল পড়ার শব্দ। কোথা থেকে আসছে জলের শব্দ? খুঁজতে গিয়ে দেখতে পায় বাঁধের দেওয়ালের গায়ে ছোট গর্ত হয়ে গিয়েছে। সেখান দিয়ে জল পড়ছে।
মুহূর্তে আঁচ করে বিপদ। বেশি না ভেবে জল আটকাতে হান্স ওই গর্তে আঙুল দিয়ে জল আটকাবার চেষ্টা করে
। জল পড়া বন্ধ হয়। এভাবেই সে হান্স সারারাত বসে থাকে। সে ভেবেছিল হাত সরালে নাগাড়ে জলের আসবে। গর্ত বড় হয়ে যাবে। বাঁধ ভেঙে পড়বে। ভেসে যাবে গোটা হার্লেম।
The post হল্যান্ডের গল্পকথার নয়, ওরা যেন এক একজন বাস্তবের হান্স appeared first on Kolkata24x7 | Read Latest Bengali News, Breaking News in Bangla from West Bengal's Leading online Newspaper.
from Kolkata24x7 | Read Latest Bengali News, Breaking News in Bangla from West Bengal's Leading online Newspaper https://ift.tt/3yJur3d
No comments:
Post a Comment