কলকাতাঃ ৩৪ বছর বাংলা শাসক করা সিপিএম এভাবে বিপর্যস্ত হবে সেটা হয়ত কেউই ভাবেনি। বড়বড় দাবি করা বিজেপির পরাজয় দিলীপ ঘোষদের শিক্ষা দিয়ে গেলেও বামেরা কি আদৌ শিক্ষা পাবে? বামেদের নতুন মুখের কথা বাদই দিন সুজন চক্রবর্তীর মতো দুঁদে রাজনৈতিকবীদদেরও বিধানসভায় দেখা যাবেনা। আরেকদিকে, রায়গঞ্জে লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর চণ্ডীতলা থেকে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করা মহম্মদ সেলিমও পরাজিত হয়েছেন।
২০০৬ সালে ২৩৫ আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসা বামেদের এই হাল হবে সেটা কেউ কোনদিনও ভাবেনি হয়ত। ২০১১ সালে তৃণমূল যখন প্রথমবার বাংলায় ক্ষমতায় আসে, তখন বামেদের আসন সংখ্যা ২৩৫ থেকে নেমে ৬২ হয়েছিল। এরপর ২০১৬ সালে সেই আসন সংখ্যা ৬২ থেকে নেমে ৩২ হয়েছিল। ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনের কথা বললে, বামেরা এরাজ্যে একটি আসন পায়নি এবং তাঁদের ভোট ৭ শতাংশরও নীচে নেমে গিয়েছিল।
২০১৯ থেকে একুশ পর্যন্ত বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছে বামেরা। এমনকি এবারের নির্বাচনে জয়ের জন্য ধর্মনিরপেক্ষ বামেরা ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গেও জোট করেছে। কিন্তু পীরজাদা বামেদের বিপর্যয় থেকে বের করা তো দূরের কথা, আরও শোচনীয় অবস্থা করে দিয়েছে। এই জোটের সময় বাম কর্মী-সমর্থকদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল, তাতেও পাত্তা দেয়নি আলিমুদ্দিন।
এছাড়াও বামেদের পুরনো শরিক দল কংগ্রেসের সঙ্গে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাসে সিদ্দিকীর যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিলনা, সেটা অনেক বারই প্রকাশ্যে উঠে এসেছে। এমনকি মহাজোটের ব্রিগেড সমাবেশেও সেই চিত্র ধরা পড়েছে। আর এর প্রভাব সরাসরি ইভিএমে পড়েছে। ২০১৯-এ প্রায় ৭ শতাংশ ভোট প্রাপ্ত করা বামেরা এবার মাত্র ৪.৬৩ শতাংশতে। আরেকদিকে, বামেদের পুরনো শরিক কংগ্রেসের অবস্থাও প্রায় একইরকম।
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ১২.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনে পেয়েছিল ৫.৬১ শতাংশ ভোট। এরপর কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব যখন দাবি করছে যে, তাঁরা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বা তাঁদের উত্থান হচ্ছে, তখন শুধু বাংলা না, বাকি চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেও তাঁর প্রভাব দেখা দিয়েছে। একুশের নির্বাচনে বাংলায় কংগ্রেসের ভোট অস্বাভাবিক ভাবে কমে ২.৮৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মাটি দুর্জয় ঘাঁটি বলা বাম শিবির জোট করেও কীভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল তাঁর উত্তর খুঁজতে মরিয়া শীর্ষ নেতৃত্বরা।
from India Rag https://ift.tt/3eHpoa0
No comments:
Post a Comment